"বিজেপি মমতাকেও জেলে পাঠাবে" বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা - সোমবার সন্দেশখালি গেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই মঙ্গলবার সন্দেশখালিতে উপস্থিত বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে ঢোকাবেন বলে মন্তব্য শুভেন্দুর। এদিন মঞ্চ থেকে বিজেপি নেতা বলেন, "এ রাজ্যে বিজেপি সরকার হলে সন্দেশখালির ঘটনায় কমিশন বসবে। আর যে মহিলাদের জেল খাটিয়েছেন, তাঁদের মিথ্যা মামলায় জেল খাটানোর জন্য বিজেপি মমতাকেও জেলে পাঠাবে।"
সূত্রের খবর, সোমবার সন্দেশখালিতে সভা করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তাঁর পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সেখানেই সভা করছে বিজেপি।তবে শুভেন্দুর এই সভার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। বিনা অনুমতিতেই সভা করছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। ফেরিঘাট থেকে হেঁটেই মঞ্চে পৌঁছলেন বিজেপি নেতা। এদিন মঞ্চ থেকে ইউনুস সরকারের সঙ্গে তৃণমূল সরকারের তুলনা করে শুভেন্দু বলেন, "বাংলাদেশে কী হচ্ছে জানেন তো? মহিলারা কি শাঁখা-পলা পরতে পারছে? পুরুষরা মাথায় তিলক রাখতে পারছেন? তুলসী মঞ্চ আছে? তাহলে এক থাকতে হবে। ওপারে ইউনুস যাহা এপারে মমতা তাহা। মাথায় ঢুকছে?আপনারা এক থাকবেন তো? ধর্ম পরিবর্তনের ইচ্ছা আছে? ওপারে রতন মজুমদার চাকরি বাঁচাতে ধর্ম পরিবর্তন করেছেন। ওঁর নাম হয়েছে শেখ শফিউল্লা। উনি চাকরি ছাড়তে পারেননি। ধর্ম ছেড়েছেন। ওই ১ লক্ষ টাকা ২০ হাজার টাকায় ঘর হয় না। বিজেপি এলে ৩ লাখ টাকার ঘর বানাব। সঙ্গে শৌচালয়। সৌর আলো। ইলেট্রিক বিল দিতে হবে না। তাই আর ১৫ মাস ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আর তারপর লাইন দিয়ে পদ্মফুলে ভোট দিতে হবে।"
এরপর সন্দেশখালিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসা নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, "উনি এসেছিলেন কালকে। কোনও সন্দেশখালি দ্বীপের লোক যাননি। অনেক লোভ দেখিয়ে সভায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। আকাশরানি এসেছিলেন। ৭ হাজার পুলিশ কাল এসেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ষশেষের উৎসবের খবর ৩ কোটি। আপনার আমার জনগণের টাকা। আমি এসেছি আপনারা কেমন আছেন দেখতে। উনি কাল এসে অপবিত্র করে গিয়েছেন। আমি এসেছি পবিত্র করতে। ওম শান্তি।"
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালকে বলছেন শাহজাহানের মাঠ থেকে। রেখা-মাম্পিরা না বেরলে ওই মাঠটা শাহজাহানের নামেই থাকত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপনি শিবু-শাহজাহানদের বলেছেন ভুলে যেতে? এতদিন অত্যাচার হয়েছে এখানে, মহিলাদের উপর অত্যাচার এগুলো ভুলে যান? এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ভুলে যেতে। কে দুষ্টু লোক মাননীয়া ? সব চেয়ে বড় দুষ্টুলোক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"
ভোট প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, "এত চুরির পরও লোকসভা ভোটে এই বাংলায় ৩৯ শতাংশ হিন্দু বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। আর ৫ শতাংশ হিন্দু সিপিএম তৃণমূল ছেড়ে বা ভোট দিতে না যাওয়া হিন্দু যদি ভোট দেন তাহলেই ওপারে ইউনূস যাহা এপারে মমতা তাহা আমার কাছে হেরেছেন। এবার আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বানাবেন। আর জঙ্গি-জিহাদিদের এ বাংলা থেকে উত্তরপ্রদেশের মতো সাফ করবেন। বদলা নেব। আইন মেনে বদলা নেব। আমায় হারাতে গেছিল কলকাতা থেকে। আমি হারিয়ে পাঠিয়েছি। এবার আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। উনি ধার করে টাকা দিচ্ছেন না। চাকরি নেই। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ১০০০ টাকা। আপনি জেনে রাখুন এক কোটি টাকা দিলেও কোনও হিন্দু ভোট দেবে না। নন্দীগ্রামে আমি জিতেছি। আমার ভাইকে জিতিয়েছি কাঁথিতে। অভিজিৎ গাঙ্গুলীকে তমলুকে জিতিয়েছি। সন্দেশ খালি যে পথ দেখিয়েছে, আগামী দিন পশ্চিমবঙ্গ সেই পথে হাঁটবে।"
সন্দেশখালির মানুষদের নিয়ে শুভেন্দু জানান, "এখানকার মানুষের অবস্থা ভাল নয়। বাম আমলে কুড়ি হাজার টাকা করে ঋণ ছিল। এখন ঋণ হয়েছে মাথাপিছু ৫৯ হাজার টাকা করে।এই যে কিছু বাড়িতে ৬০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন না? সেটাও ভারত সরকারের থেকে ঋণ নিয়ে। কাল এমন ভাবে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মনে হবে না, মনে হবে বিরোধী দলনেতা বা ৬ মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। কাল বলছেন রামপুর জেলিয়াখালি করে দেব। আপনাকে করতে হবে না, বিজেপি ক্ষমতায় এলে করে দেবে। এতদিন পরে মনে পড়েছে সন্দেশখালিতে ৫০ বেডকে ১০০ বেড করবে। স্বাস্থ্য সাথীতে কিছু হয়? আয়ুষ্মান ভারত চালু করতে দেয়নি। একাধিক ভারত সরকারের স্কিম চালু করতে দেয়নি।"