আর্থিক জালিয়াতি রুখল ব্যাঙ্ক, প্রতারণার হাত থেকে বাঁচল সিউড়ি পুরসভা
নিজস্ব প্রতিনিধি, বীরভূম - ব্যাঙ্কের তৎপরতায় বিরাট আর্থিক জালিয়াতির হাত থেকে বাঁচল সিউড়ি পুরসভা। সিউড়ি পুরসভার নামে জাল চেক ইস্যু করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল জালিয়াতরা। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা সিউড়ি পুরসভার কাছে এই চেকের বিষয়ে জানতে চান। তখনই সম্পূর্ণ জালিয়াতি ধরা পড়ে। এরপরেই ব্যাঙ্কের তরফ থেকে আটকে দেওয়া হয় লেনদেন। তবে কিভাবে সিউড়ি পুরসভার চেক ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সই জালিয়াতদের হাতে পৌঁছালো, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সূত্রের খবর, যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পুরসভার আর্থিক লেনদেন করা হয়, সেই ব্যাঙ্কের তরফে গত বৃহস্পতিবার সিউড়ি পুরসভার কাছে জানতে চাওয়া হয়, পুরসভার নামে দুটি চেক কালিম্পং পুরসভাকে ইস্যু করা হয়েছে কিনা। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে জানায়, তাঁদের কাছে দুটি চেক ক্লিয়ারেন্সের জন্য এসেছে, যেগুলি গত ১৯ ও ২২ নভেম্বর সিউড়ি পুরসভার তরফে কালিম্পং পুরসভাকে দেওয়া হয়েছে। পুরসভার ফিন্যান্স অফিসার এবং এক্সিকিউটিভ অফিসারের সই করা এই দুটি চেকের মাধ্যমে মোট ৯ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তাঁরা। অথচ যে দুটি চেক থেকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে বলে ব্যাঙ্কের কাছে তথ্য রয়েছে, সেই ১৪৩ ও ১৪৪ নম্বরের চেক দুটি সিউড়ি পুরসভার তরফে এখনও ইস্যুই করা হয়নি বলে জানায় পুরসভা। চেক বইয়ে সম্পূর্ণ ফাঁকা অবস্থায় রয়েছে। এরপরেই ঘটনাটি খতিয়ে দেখে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ এই লেনদেনটিকে আটকে দেন। সোমবার পুরসভা খুললেই এই বিষয়ে সাইবার ক্রাইম থানা এবং ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান পুরপ্রধান। কিন্তু হঠাৎ সিউড়ি পুরসভার চেক কিভাবে কালিম্পং পুরসভার কাছে পৌঁছালো, দুই পুরসভার কোনও কর্মী বা আধিকারিক এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন কিনা, চেক পাস হয়ে গেলে টাকা কোন অ্যাকাউন্টে যেত, সেই সবই খতিয়ে দেখা হবে বলে খবর।
এই বিষয়ে পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা একটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। যে বা যারা এই কাজ করেছে, তারা আমাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিষয়ে সমস্ত তথ্য জেনেই করেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করতে না পারলে ভবিষ্যতে আবারও এমন ঘটনা ঘটতেই পারে।”
সিউড়ি পুরসভার অ্যাকাউন্টেন্ট সীতাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “আমি অ্যাকাউন্টেন্ট থাকাকালীন কালিম্পং কেন, কোনও পুরসভাকেই কোনও টাকা দিই নি। কিন্তু এই চেকে যে সইগুলি ছিল সেগুলি একদম মিলে গিয়েছিল। সেখানে সঠিক স্ট্যাম্পও দেওয়া হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টে যে দশ লক্ষের বেশি টাকা রয়েছে, সেটাও জালিয়াতরা জানে। ব্যাঙ্কের তরফ থেকে সন্দেহ না হলে এই টাকা আমাদের অ্যাকাউন্ট থেকে বেরিয়ে যেত এবং আমরা সমস্যায় পড়ে যেতাম। এই বিষয়ের গভীর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”