এলাহাবাদ হাই কোর্টে এন্ট্রি বিতর্কিত বিচারপতি বর্মার
নিজস্ব প্রতিনিধি, দিল্লি – খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন বিচারপতি যশবন্ত বর্মা। তাঁর বাড়িতে সারি সারি টাকা উদ্ধারকাণ্ডে নয়া মোড়। তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের আবেদন খারিজ করে দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। শনিবার এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি পদে শপথ নিলেন বিতর্কিত বিচারপতি বর্মা।
সম্প্রতি বিচারপতি বর্মাকে এলাহাবাদ হাই কোর্টে বদলি করার প্রতিবাদে সরব হয়েছিল সেখানকার বার অ্যাসোসিয়েশন ও আইনজীবীরা। তাঁর বদলির বিরুদ্ধে চিঠি লিখে সরব হয়েছেন দেশের ছয় রাজ্যের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান। তাঁদের দাবি, বদলি নয়, সব কাজ থেকে সরাতে হবে বিচারপতি বর্মাকে। বিতর্কিত বিচারপতি বর্মার ভবিষ্যৎ নিয়ে কেন্দ্রকে নিজেদের সুপারিশ পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটিতে রয়েছেন পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি শিল নাগু, হিমাচল প্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি জিএস সান্ধাওয়ালিয়া এবং কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি অনু শিবারমণ।
বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি কে উপাধ্যায়। ২৫ পাতার রিপোর্ট আপলোড করা হয়েছে শীর্ষ আদালতের ওয়েবসাইটে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পোড়া নোটের স্তূপ রয়েছে বিচারপতি যশবন্তের বাসভবনে। দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং দিল্লি পুলিশের কমিশনার সঞ্জয় আরোরা ওই ছবি সংগ্রহ করেছেন।
রিপোর্ট পাওয়ার পরই কলেজিয়ামের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। গোটা ঘটনা অস্বীকার করে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার দাবি, “ঘটনাস্থলে এমন কিছু আমি মোটেও দেখতে পাইনি। পুরোটাই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। ওই ঘরে প্রচুর জিনিস থাকত, বেশ কিছু নথিপত্রও ছিল। আমার বাড়ি থেকে ওই ঘরটি সম্পূর্ণ আলাদা। অনেকেই ওখানে যাতায়াত করত।“
বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়িতে লেগেছিল আগুন। তা নিয়ন্ত্রণের জন্য খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও দমকলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় সারি সারি টাকা। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতিকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম।
সূত্রের খবর, যখন বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তখন দিল্লিতে ছিলেন না বিচারপতি যশবন্ত বর্মা। দমকল ও পুলিশকে খবর দেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আগুন নেভানোর পর একটি ঘরের ভিতরে সারি সারি টাকা দেখতে পান দমকলকর্মীরা। এরপরই ঘটনাটি জানানো হয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না কলেজিয়ামের বৈঠক ডাকেন। সেখানে জাস্টিস বর্মাকে দিল্লি থেকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।