"দালাল ভাঙলেও ইতিহাস ধ্বংস করতে পারবে না", হুঁশিয়ারি হাসিনার
নিজস্ব প্রতিনিধি, দিল্লি - বুধবার সন্ধ্যা থেকে বাঙালির ইতিহাস মুছতে উঠে পড়ে লেগেছে বাংলাদেশের ‘বিপ্লবী ছাত্র’ দল। ধানমন্ডিতে মুজিবের বাড়ি ধূলিসাৎ থেকে হাসিনার বাসভবন আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তারা। এরপর ৫৮ মিনিটের ভাষণ দিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভিডিও বার্তা দিয়ে হাসিনা বলেন, "লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে সংবিধান, স্বাধীনতা, পতাকা পেয়েছি তা কয়েক জন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে পারবে না। এ শক্তি তাঁদের এখনও হয়নি। এটি তাঁদের দুর্বলতার প্রকাশ। তাঁরা দালান ভাঙতে পারে, কিন্তু ইতিহাসকে ধ্বংস করতে পারে না। ইতিহাস যে প্রতিশোধ নেয়। এ কথা তাঁদের মনে রাখতে হবে। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁরা হীন মনের পরিচয় দিচ্ছেন। তাঁদের হয়তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা পছন্দ নয়। পাকিস্তানিদের অধীনে থাকা এবং পদলেহন করাটাই হয়তো তাঁদের পছন্দ।”
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল। তখনও এই বাড়িটি তারা লুঠপাট করেছিল। কিন্তু আগুন দিয়ে পোড়ায়নি, ভাঙেনি। আমার মা অনেক কষ্ট করে এই বাড়িটির প্রতিটি ইট নিজের হাতে গেঁথেছিলেন। বাংলাদেশ থেকে কি রাজনীতিকে মুছে ফেলতে চাইছেন ইউনুস? তিনি কি তালিবনি কায়দায় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান?বাংলাদেশকে নিয়ে ধ্বংসের খেলা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল ছিল, উন্নয়নের বিস্ময় ছিল। সেই বাংলাদেশকে চরম ভাবে ধ্বংস করে জঙ্গি, সন্ত্রাসীদের দেশ হিসাবে পরিণত করা হয়েছে। এটিই হল সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়। দেশের মানুষের কাছে বিচার চাই।”
উল্লেখ্য, ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৩২ নম্বরের বাড়ির সামনের অনেকটা অংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে তারা। ওই বাড়ি তথা জাদুঘরে স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে মুজিবের। বাড়ি ভাঙতে হাতুড়ি, শাবল, বিরাট ক্রেন ব্যবহার করা হয়।
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজে শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল ভাঙচুর চালায় উন্মত্ত জনতা। ময়মনসিংহ সহ বিভিন্ন জায়গায় শেখ মুজিবরের মূর্তি ভেঙে দিয়েছে ‘বিপ্লবী ছাত্র’ দল। ভৈরবে আওয়ামি লিগের কার্যালয় ভাঙচুর চালানো হয়। বুধবার রাতে ধানমন্ডিতে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনেও আগুন লাগিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা।