অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস গাজায়! ১৫ মাস পর যুদ্ধবিরতি হামাস-ইজরায়েলের
নিজস্ব প্রতিনিধি, দোহা - দীর্ঘ ১৫ মাস পর অবশেষে স্বস্তির খবর। যুদ্ধবিরতিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে হামাস-ইজরায়েল। অবশেষে মুক্তি পেতে চলেছে পণবন্দিরা। স্বাভাবিক হতে চলেছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালিয়ে ছিল হামাস। সেই সময় ২৫০ মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল হামাস। এরপর থেকে একের পর এক রক্তক্ষয়ী হামলা চালায় ইজরায়েলি সেনা। এর জেরে গাজাকে কার্যত শশ্মানে পরিণত করে দিয়েছে ইজরায়েল। এই হামলায় প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
শর্ত মেনে যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটতে চলেছে হামাস ও বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ। কাতারের রাজধানী দোহায় দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় তুলে ধরা হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুঁটিনাটি দিকগুলি। এক ইজরায়েলি কর্মকর্তার কথা অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে ৩৩ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে শিশু, মহিলা সেনা কর্মী, ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ, মহিলা। তিনি আশা করছেন, এই ৩৩ জন পণবন্দিদের মধ্যে সকলেই জীবিত রয়েছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি প্রথম পর্যায়ের কাজ হয়, তাহলে চুক্তি কার্যকর হওয়ার ১৬ দিন পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় জীবিত বন্দি, পুরুষ সেনা কর্মী, যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী পুরুষদের মুক্তি ও মৃত বন্দিদের দেহ ফেরত দেওয়া হবে। খুন বা ভয়ঙ্কর আক্রমণের জন্য ইজরায়েলের আদালত যে সব প্যালেস্তেনীয় যোদ্ধাকে সাজা দিয়েছে, তাদেরও মুক্তি দেওয়া হবে, তবে এই সংখ্যা নির্ভর করবে হামাস কতজন জীবিত বন্দিকে ছাড়বে তার উপর।
অন্যদিকে ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহার করবে ইজরায়েল। সীমান্ত শহর, গ্রামের নিরাপত্তায় সীমান্তের আশেপাশে, গাজার দক্ষিণ অংশের ফিলাডেলফি করিডরে মোতায়েন থাকবে ইজরায়েলি সেনা। যদিও চুক্তি কার্যকর হওয়ার কয়েকদিন পর সেখান থেকে আংশিক সেনা প্রত্যাহার করার পথে হাঁটবেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গাজার কেন্দ্রীয় নেটজারিম করিডর থেকেও সেনা প্রত্যাহার করে নেবে ইজরায়েল। চুক্তি অনুযায়ী, অস্ত্র ছাড়া নিজেদের বাসস্থানে ফিরে আসার অনুমুতি দেওয়া হবে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের।
হিজবুল্লা থেকে হামাসের বেশিরভাগ বড় বড় মাথাকেই খতম করেছে ইজরায়েলি সেনা। হামাসের প্রাক্তন প্রধান ইসমাইল হানিয়েহরকেও হত্যা করেছে ইজরায়েল। হাউথি বিদ্রোহীদেরও খতম করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেল আভিভ। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, “হাউথি বিদ্রোহীদের কড়া জবাব দেব আমরা। ওদের নেতৃত্বকে ছিন্নভিন্ন করব। ঠিক যেভাবে আমরা তেহরান, গাজা ও লেবাননে হত্যা করেছি হানিয়েহ, সিনওয়ার, হাসান নাসরল্লাহকে। ইয়েমেনের হোদেদা ও সানাতেই এমনটাই ঘটবে। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে তার মাথা কেটে নেওয়া হবে। ইজরায়েলি সেনার নজর থেকে কেউ রেহাই পাবে না, নিজেদের কৃতকর্মের ফল ভুগতে হবে ওদের।“
২০২৪ সালের ৩১ জুলাই ইরানে হত্যা করা হয়েছিল হানিয়েহকে। তার মৃত্যুর পর হামাস প্রধানের দায়িত্ব নেয় ইয়াহিয়া সিনওয়ার। গত ২১ সেপ্টেম্বর তাকে দক্ষিণ গাজার একটি স্কুলে বোমাবর্ষণের মাধ্যমে হত্যা করে ইজরায়েল। লেবাননে বাঙ্কারে লুকিয়ে থাকা হেজবোল্লা প্রধান নাসরাল্লাহকে হত্যা করেছিল তেল আভিভ।