স্তন খামচে ধরা ধর্ষণ নয়! হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের 

নিজস্ব প্রতিনিধি, উত্তরপ্রদেশ – কোনও মেয়ের পরনে থাকা পাজামার দড়ি ছেঁড়া থাকলে বা স্তন খামচে ধরলে, তা ধর্ষণ না। এই পর্যবেক্ষণ করেছে উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এই বিতর্কিত রায়ে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলার পর্যবেক্ষণ ছিল বিচারপতি বিআর গবই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি গবৈ-এর বেঞ্চ জানিয়েছে, “হাই কোর্টের এই রায়ে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। এই ধরনের রায়ে সংবেদনশীলতার অভাব রয়েছে। এই রায় তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া হয়নি। অন্তত চার মাস পর এই রায় প্রকাশ করা হয়েছে। সমস্ত দিক বিবেচনা করে আমরা আপাতত এই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিচ্ছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। এই মামলায় বিচারপতি সম্পূর্ণ অসংবেদনশীলতার কাজ করেছে। বিচারপতি সম্পর্কে এমন কঠোর শব্দ ব্যবহারের জন্য আমরা দুঃখিত। কিছু রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।“
 
ঘটনাটি ঘটে ২০২১ সালে উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জে। যে নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তার বয়স ১১ বছর। অভিযোগ, অভিযুক্ত দু জন তার স্তন স্পর্শ করে এবং তার পরন থাকা পাজামার দড়ি ছিঁড়ে ফেলে। তারপর তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে টেনে, হিঁচড়ে একটি কালভার্টের নীচে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করে। নির্যাতিতাকে 'লিফট' দেওয়ার বাহানা করেছিল দুই অভিযুক্ত। তারপরই তার সঙ্গে এই আচরণ করে ওই দুই ব্যক্তি। স্থানীয়দের জন্য রক্ষা পায় নাবালিকা।

পরবর্তীতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের নাম পবন ও আকাশ। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ নম্বর ধারা এবং পকসো আইনের ১৮ নম্বর ধারা অনুসারে মামলা রুজু করা হয়। কাসগঞ্জ ট্রায়াল কোর্টের নির্দেশেই এই ধারাগুলি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়।

এলাদাবাদ হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪-বি নম্বর ধারা (নিগ্রহ অথবা পোশাক খুলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক শক্তির ব্যবহার) এবং পকসো আইনের ৯/১০ নম্বর ধারা (আক্রমণাত্মক যৌন নিগ্রহ) অনুসারে মামলা করতে হবে। এই মামলায় তৃতীয় অভিযুক্ত হিসাবে পবনের বাবা অশোকের নাম রয়েছে। তাকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪ নম্বর ধারা (শান্তি বিঘ্নিত করার লক্ষ্য়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অবমাননা করা) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন) নম্বর ধারার অধীনে সমন পাঠানো হয়েছে। অশোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, এই ঘটনার পর নাবালিকাকে অশোক অপমান করেছিল এবং ভয় দেখিয়েছিল।