বদলার ম্যাচে হিরো আপুইয়া, জামশেদপুরকে তছনছ করে আইএসএল ফাইনালে সবুজ মেরুন
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা – “মাচা ভাইয়ের রক্ত, হবে না কো ব্যর্থ” – আইএসএল সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে জামশেদপুরে রক্তাক্ত হয়েছিলেন এক মোহনবাগানি। তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড হয়েছিল এই লাইনটি। সোমবার যুবভারতীতে সেটাই প্রমাণ করে দিলেন আপুইয়ারা। ঘরের মাঠে জামশেদপুরকে তছনছ করে তৃতীয়বারের জন্য আইএসএল ফাইনালে উঠল মোহনবাগান।
টেম্পো হোক বা বাইক কিংবা বাস, বিকেল থেকেই যুবভারতীর উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন হাজার হাজার মোহনবাগানি। টেম্পো থেকে ভেসে আসছিল কখনও “চিরকাল রেলায় আছে থাকবে মোহনবাগান”, তো আবার কখনও শোনা যাচ্ছিল “আমাদের সূর্য মেরুন, নাড়ির যোগ সবুজ ঘাসে”। যা শুনে হাজার হাজার মোহনবাগানির প্রতিশোধের স্পৃহা আরও বেড়ে যাচ্ছিল। ঘড়ির কাঁটায় প্রায় ৭টা বেজে গিয়েছে। যুবভারতী পরিণত হয়েছে মোহনভারতীতে।
ম্যাচের প্রথম থেকে ‘সাইক্লোন’-এর মতো ঝড় তোলে জেমি-দিমিরা। তবে গোলের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রথমার্ধ শেষে স্কোরলাইন ০-০। দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই শুধুই আক্রমণ, আক্রমণ আর আক্রমণ করতে থাকেন মোলিনার ছাত্ররা। বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবল। ৫১ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। ডানপ্রান্তে ঝাঁপান গোলরক্ষক। কিন্তু বাঁ-প্রান্তে জোরালো শট মারেন জেসন কামিন্স। বল চলে যায় তেকাঠি পেরিয়ে সোজা গোলে। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় মোহনবাগান।
তবে প্রথম লেগের ম্যাচে জামশেদপুরের কাছে ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরে গিয়েছিল সবুজ মেরুন। অর্থাৎ, দুই লেগ মিলিয়ে সমতায় ফিরল দিমিরা। এরপর একাধিক বার গোলের সুযোগ পেলেও গোল হচ্ছিল না বাগান বাহিনীর। ৮৪ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে আশিস রাই, মনবীর সিং, দিমিত্রি পেত্রাতোসের মিলিত প্রয়াসে সহজ গোলের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন অনিরুদ্ধ থাপা। কিন্তু এ কি করলেন তিনি! বল পাঠিয়ে দিলেন সোজা মহাকাশে! হতাশ মোহনজনতা।
অবশেষে ৯০+৪ মিনিটে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। অনিরুদ্ধ থাপার ঠিকানা লেখা পাস থেকে ডি বক্সের বাইরে দিয়ে বাঁক খাওয়ানো তিরের মতো গোল করেন আপুইয়া। বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন হাজার হাজার মোহনবাগানি। মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যান হেড স্যার মোলিনা সহ মোহনবাগানের ফুটবলাররা। ২-০ ব্যবধানে দ্বিতীয় লেগে জয় পেল মোহনবাগান। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানে জিতে আগামী ১২ মে যুবভারতীতে বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে নামতে চলেছে মোহনবাগান।