দিল্লি নগদ কাণ্ডে বিচারপতি বর্মাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি হাই কোর্টের
নিজস্ব প্রতিনিধি, দিল্লি – বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়িতে সারি সারি টাকা উদ্ধারকাণ্ডে নয়া মোড়। এবার আপাতত তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। তাঁর নাম সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতিদের রস্টার থেকে।
বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি কে উপাধ্যায়। ২৫ পাতার রিপোর্ট আপলোড করা হয়েছে শীর্ষ আদালতের ওয়েবসাইটে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পোড়া নোটের স্তূপ রয়েছে বিচারপতি যশবন্তের বাসভবনে। দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং দিল্লি পুলিশের কমিশনার সঞ্জয় আরোরা ওই ছবি সংগ্রহ করেছেন।
রিপোর্ট পাওয়ার পরই কলেজিয়ামের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। গোটা ঘটনা অস্বীকার করে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার দাবি, “ঘটনাস্থলে এমন কিছু আমি মোটেও দেখতে পাইনি। পুরোটাই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। ওই ঘরে প্রচুর জিনিস থাকত, বেশ কিছু নথিপত্রও ছিল। আমার বাড়ি থেকে ওই ঘরটি সম্পূর্ণ আলাদা। অনেকেই ওখানে যাতায়াত করত।“
সম্প্রতি বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়িতে লেগেছিল আগুন। তা নিয়ন্ত্রণের জন্য খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও দমকলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় সারি সারি টাকা। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতিকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম।
সূত্রের খবর, যখন বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তখন দিল্লিতে ছিলেন না বিচারপতি যশবন্ত বর্মা। দমকল ও পুলিশকে খবর দেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আগুন নেভানোর পর একটি ঘরের ভিতরে সারি সারি টাকা দেখতে পান দমকলকর্মীরা। এরপরই ঘটনাটি জানানো হয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না কলেজিয়ামের বৈঠক ডাকেন। সেখানে জাস্টিস বর্মাকে দিল্লি থেকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১৯৬৯ সালের ৬ জানুয়ারি এলাহাবাদে জন্ম যশবন্ত বর্মার। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের হংসরাজ কলেজ থেকে বিকম অনার্স সম্পন্ন করেন। এরপর মধ্যপ্রদেশের রেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি অর্জন করেন তিনি। ১৯৯২ সালের ৮ আগস্ট আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০১৪ সালের ১৩ অক্টোবর এলাহাবাদ হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন যশবন্ত। ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি স্থায়ী বিচারপতি পদে বসেন তিনি। ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে শপথ নেন বিচারপতি যশবন্ত বর্মা।