জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করলেন স্বামী! মালদহে চাঞ্চল্যকর ঘটনা
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ - শুনতে অবাক লাগলেও হরিশচন্দ্র পুরের এই ঘটনায় হতবাক সকলে। দীর্ঘ ১৯ বছরের বিবাহিত জীবন ছেড়ে স্ত্রীর অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায়, ক্ষুব্ধ ও শোকাহত স্বামী তাকে সামাজিকভাবে "মৃত" বলে ঘোষণা করে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করলেন। মর্মাহত স্বামীর নেওয়া এই সিদ্ধান্তে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সূত্রের খবর, মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের ১ ব্লকের পরাশটলা গ্রামের বাসিন্দা অচিন্ত্য রায় পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তার স্ত্রী দৌপ্রদী রায়ের সঙ্গে দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে সংসার করেছেন। নিঃসন্তান এই দম্পতির মধ্যে কোনোরকম কোনো অশান্তি ছিল না। কিন্তু স্বামী অচিন্ত্য রায় বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছিলেন তার স্ত্রী রাতে ফোনে কারোর সঙ্গে কথা বলেন। স্ত্রীকে অনেক শাসন করার পরেও গত ১৮ই মার্চ দ্রৌপদী তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, পালানোর পর তার প্রেমিকের সঙ্গে তোলা ফটো ও ফেসবুকে বানানো রিলস তার স্বামীকে দেখানোর চেষ্টা করেন ও তার স্বামীর হোয়াটসঅ্যাপেও শেয়ার করেন। স্ত্রীকে ভুলতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া স্বামী তার স্ত্রীকে সামাজিকভাবে "মৃত" বলে ঘোষণা করলেন ও তার আত্মার শান্তি কামনা করে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। মঙ্গলবার হিন্দুরীতি মেনে বাড়িতে পুরোহিত ডেকে মন্ত্রপাঠ, ভোজ ও আত্মীয় স্বজনদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানায় যে, তারা দ্রৌপদীর সঙ্গে সমস্ত রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
ঘটনা প্রসঙ্গ অচিন্ত্য রায় জানিয়েছেন, এই ভাবে যে চলে যাবে সেটা ভাবিনি। আমার টাকা পয়সা, সোনা যা ছিল সব নিয়ে চলে গেছে। আমি বাইরে কাজ করতাম আর আমার স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতাম। ফোনে অন্য কারোর সঙ্গে কথা বলত জানতাম কিন্তু এভাবে চলে যাবে সেটা জানতাম না। প্রায় ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছে। ওর বাবা - মা সব জানে কিন্তু আমাকে কিছু বলছে না। ওর প্রেমিকের সঙ্গে ফটো তুলে আমাকে পাঠাচ্ছে।
ঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিপ্লব রায় জানিয়েছেন, বউটি অচিন্ত্যর সারাজীবনের সঞ্চয় নিয়ে চলে গেছে। টাকা পয়সা সোনা যা ছিল সবই নিয়ে গেছে। আমাদের এখন সিদ্ধান্ত এটাই যে, আমরা এই ছেলেটিকে আবার বিয়ে দেবো কিন্তু তাতে যেন কোনপ্রকার কোনো বাধা না আসে তাই আমাদের এইসব করা। কোন ছেলের সঙ্গে গেছে জানা নেই কিন্তু চলে যাওয়ার পর ছেলেটির সঙ্গে নানারকম ছবি তুলে পাঠাচ্ছে। এতে সমাজ কলঙ্কিত হচ্ছে।