'আমাকে না জানিয়েই প্রার্থী হিসাবে আমার নাম ঘোষণা করেছে', তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জহর সরকারের
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা - আরজি কর কাণ্ডের পর সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূল ছেড়েছিলেন জহর সরকার। এবার তৃণমূলকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন তিনি। জহর সরকার জানান অনুমতি না নিয়েই ২০২১ সালে রাজ্যসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছিল তৃণমল।
সংবাদমাধ্যমে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার জানান, "আমি এই দলের সদস্য হিসাবে চাঁদা দিয়ে কোনও দিন ঢুকিনি। আমাকে মুখ্যমন্ত্রী ও দলনেত্রী নিজে ফোন করে আসতে বলেছিলেন। আমি একটু ইতস্তত করছিলাম। যতক্ষণ ইতস্তত করছিলাম ততক্ষণে শুনলাম রেডিয়োতে - টিভিতে জানিয়ে দিয়েছে। টিভি - রেডিয়োতে জানানোর পরে আমি যদি গিয়ে বলি না আমি যাব না হয় লোকে বলবে ন্যাকা, না হলে বলবে নিউজ় চাইছে, নাহলে অন্য কোনও মতলব আছে। আর সরাসরি ঝগড়া করতে চাইছে।"
প্রাক্তন সাংসদ আরও বলেন, "আমি দেখলাম, যখন হয়েই গেছে, আমাকে যে কাজটা দেওয়া হয়েছে, সংসদে বাংলার হয়ে প্রশ্ন তোলা আপনারা দেখবেন আমি কত বার সওয়াল করেছি। আমার মতো অত সওয়াল বোধ হয় ৩ বছর আর কেউ করেনি। আমাকে যে কাজটা দেওয়া হয়েছিল সেটা করেছি। তৃণমূলের চরিত্র কী আমি জানতাম। আমি জিনিসটা প্র্যাক্টিকালি নিয়েছি। সব দলই তো ওই।"
তৃণমূল সাংসদ হওয়া নিয়ে জহর সরকার বলেন, "২০২১ সালে কিন্তু বাংলার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মমতা ব্যানার্জিকে সম্পূর্ণ ভোট দিয়ে প্রচুর ভোটে জিতিয়েছেন। তার মানে সব দলকে তাঁরা বাদ দিয়ে দিয়েছেন। বামফ্রন্ট - কংগ্রেস শূন্য। যা বিশ্বাস করা যায় না। বাংলার মানুষ তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সর্বভারতীয় ভূমিকায় দেখতে চেয়েছিল। আমি তখন গিয়েছি। আমি কোনও ফৌজদারি অপরাধ করিনি। আমি সাংসদ হওয়ার ১ বছর পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবীর বাড়িতে এত টাকা পাওয়া গেল। আমি ছাড়া আর কোনও সাংসদ সেব্যাপারে মুখ খোলেননি। আমি টিভির ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বলেছি, এটা অন্যায়। এটা পচা গলা ব্যাপার। এদের এক্ষুণি ব্যবস্থা না করা হলে পার্টির ক্ষতি হবে। সেই নিয়ে অনেক তিরস্কার শুনতে হয়েছে।"
তৃণমূল থেকে পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, "আমি বেরিয়ে যাওয়ার একটা প্রচেষ্টা করেছিলাম। তখন মুখ্যমন্ত্রী আমাকে বললেন, আপনি যে ভাবে সংসদে বলছেন সেটা আমাদের খুব দরকারি। আপনি সংসদের ব্যাপারটা দেখুন, রাজনীতি নিয়ে বেশি ভাববেন না। আমি তার পর ১ বছর সংসদ নিয়েই রইলাম। তার পর আবার দেখি, যে কে সেই। পানাপুকুর আবার পানায় ভর্তি হয়ে য়াচ্ছে। গা চুলকোতে আরম্ভ করল। চারিদিকে তাকিয়ে দেখি, পঞ্চায়েতের নেতা, যার কুড়ে ঘর ছিল না, সেও তিন তলা বানিয়ে নিচ্ছে। চলছেটা কী? তখন দেখলাম এখানে আর থাকা যায় না।"