'মহিলা বলে অপমান করতে পারেন না' , তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে কটাক্ষ কল্যাণের
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা - তৃণমূলের অন্দরের সংঘাত এবার প্রকাশ্যে। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় দলেরই তিন সাংসদ। জানা যাচ্ছে ৪ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে স্মারক লিপি জমা দিতে যাওয়া নিয়ে মূলত বিরোধ বাধে। দলের তরফে একসঙ্গে স্মারকলিপি জমা দিতে বলা হলেও, তৃণমূলের একজন সরাসরি নির্বাচন কমিশনে হাজির হন বলে জানান তিনি। কল্যাণ উষ্মা প্রকাশ করছেন, এমন একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করেন মালবীয়। আর সেই নিয়ে জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করেন কল্যাণ।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কোনও অবদান নেই। ২০০৯ সালের পর এসেছে। কংগ্রেসের কোনও বড় নেতার বান্ধবী বলেই তো জেলার রাজনীতিতে ঢুকে গিয়েছিল? এদের সব ব্যাকগ্রাউন্ড এমন। আমি কেন মানব, স্বভাবতই অসন্তুষ্ট হয়েছিলাম। আমার মতো লোককে জেলে ঢোকাতে বলছে! বলছে অশালীন শব্দ ব্যবহার করেছি। এটা মিথ্যে কথা সম্পূর্ণ। ভিডিওটা আমাদেরই একজন সাংসদ, যে বাইরে থেকে এসেছে, সেই বাজারে ছেড়ে দিয়েছে। এর একটা ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে। ঠিক আগের দিন কীর্তি আজাদ কয়েক জন মহিলা সাংসদ, দু'চার জন পুরুষ সাংসদের চিঠি নিয়েছিল। স্পিকারের উদ্দেশে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়, চিত্তরঞ্জন পার্কের সন্দেশের দোকানের কাউন্টার খোলা হোক সংসদে। আমি জেনেি বিরোধিতা করেছি। দলের অনুমতি ছাড়া কে দোকান খুলবে! তৃণমূল বেসরকারি ব্যবসাতে আগ্রহী নয়। আমাকে বলা হয়, প্রাইভেট ম্যাটার! তৃণমূলের প্রতীকে সাংসদ হয়েছে। সাংসদদের সই সংগ্রহ করছে। প্রাইভেট ম্যাটার হল কী করে? চিঠি জমা দিতে পারেনি। আমার উপর রাগ হয়েছে।"
যে মহিলা সাংসদকে কটাক্ষ করেছেন কল্যাণ, তাঁর নাম প্রকাশ্যে না আনলেও তাঁকে নিয়ে অভিযোগ করে কল্যাণ বলেন, "এই যে মহিলা সাংসদ। ইনি কিছুদিন আগে সংসদে আমাকে ছোটলোক বলেছেন। আমার মেয়ে নিয়ে কথা বলেছেন। যত সময় চাইবেন ওঁকে দিতে হবে। ওঁর রাগ হচ্ছে আমি কেন ওয়াকফ বিলে বলেছি। ভাই তুমি যদি সামান্য বিল নিয়ে কথা বলতে ১৮ মিনিট নাও, তা ওয়াকফ বিল নিয়ে কথা বলতে আমি ৩৫ মিনিট নেব না? তুমি আগ্রহী না হলেও, ভারতের অনেকে আগ্রহী আমি ওয়াকফ বিল নিয়ে কী বলি, তা জানতে। আমি তো সাধারণ মানুষের কথা বলি, তুমি তো এক শিল্পপতির হয়ে আর এক শিল্পপতিকে আক্রমণ করো! আরও অনেক কিছু বলব যদি মুখ খোলে। সেটা কিন্তু শুনতে ভাল লাগবে না। আর যে সাংসদ দলের অভ্যন্তরে রাজনীতি করছেন, তিনি বাইরের রাজ্য থেকে, অন্য দল থেকে এসেছেন, সেই দল থেকে বিতাড়িত হয়ে এসেছেন। অনেক সন্দেহ রয়েছে অনেক ব্যাপারে।"
কল্যাণ আরও বলেন, "নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বলো, কিন্তু অমিত শাহের বিরুদ্ধে তো কিছু বলো না ভাই? রাজনাথ সিংহ, পীযূস গয়ালের বিরুদ্ধে বলো না কিছু। শুধু আদানি আর নরেন্দ্র মোদি। আর বিজেপির কোনও নেতা নেই বলার! নির্বাচন কমিশনে যে চিঠি পড়েছে, তাতে ওই সাংসদের সই নেই। আমি এই সাক্ষাৎকার দিতাম না। যে সাংসদ নির্বাচনের সময় বলেন ইজ মাই এনার্জি, তাঁর কাছ থেকে কী ভদ্র ব্যবহার আশা করো! সেদিনই জানিয়েছি, ডেরেককে জানিয়েছে, সুদীপদাকেও জানিয়েছি। এটা হতে পারে কখনও! কোনও কারণে ঝগড়া হতেই পারে। কিন্তু সিআইএসএফ-কে ডেকে বলতে পারি গ্রেফতার করতে? সাংসদ হিসেবে নিজের ক্ষমতা করছে? তাহলে আমি কে? সিপিএম-এর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসা লোক আমি। কোটায় আসা লোক নই আমি। ২০১১ সালের পরে এসে রাজনীতি করার লোক নই। দল যেদিন বলবে সব ছেড়ে দিয়ে চলে যাব। কিন্তু এসব অসভ্য় মহিলা সাংসদদের সহ্য করব না। দিদি একবার বলুক, আমি এখনই পদত্যাগ করে চলে যাব। মহিলা বলে এই নয়, সুন্দরী মহিলা বলে এই নয়, ফট ফট করে ইংরেজি বলতে পারে বলে যে কোনও পুরুষকে অসম্মান করতে পারে না। সবকিছু সীমা আছে।"