প্রয়াত ওস্তাদ জাকির হোসেন, শোকস্তবদ্ধ সঙ্গীতজগৎ
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা - নক্ষত্রপতন সংগীত জগতে। প্রয়াত কিংবদন্তী তবলা বাদক জাকির হোসেন। রবিবার আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর এক হাসপাতালে শিল্পীকে ভর্তি করানো হয়েছিল। হার্টের সমস্যা নিয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হলনা। ৭৩ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তবলার জাদুকর।
শিল্পীর মৃত্যুতে শোকস্তবদ্ধ করেছে রাজনৈতিক জগৎ থেকে টলিউড বলিউড সবাই। শোকপ্রকাশ করে রহমান লিখেছেন, "জাকির ভাই ছিলেন একজন অনুপ্রেরণা। অসামান্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী। যিনি তবলাকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। ওঁর চলে যাওয়া আমাদের সকলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। ওঁর সঙ্গে আর কাজ না করতে পারার আক্ষেপটা রয়েই গেল। একসঙ্গে একটা অ্যালবাম করার পরিকল্পনাও করেছিলাম আমরা। যদিও কয়েক দশক আগে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। তোমাকে সত্যিই মিস করব। ঈশ্বর ওঁর পরিবার এবং জাকির ভাইয়ের বিশ্বব্যাপী অগণিত শিষ্য-শিষ্যাদের এই কঠিন সময়ে শোক সামলানোর ক্ষমতা দিন, এটাই প্রার্থনা করব।"
পাশাপাশি শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী, রাজস্থানের মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠৌরের মত একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও সমাজ মাধ্যমে শিল্পীর মৃত্যু নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন, "উস্তাদ জাকির হুসেনের চলে যাওয়া এই পৃথিবীকে সংস্কৃতিকভাবে আরও গরীব করে দিল। তবলার ওপর নাচ করত তাঁর আঙুল। তিনি তবলাকে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বের মঞ্চে।"
উল্লেখ্য, ১৯৫১ সালে মুম্বইয়ে জন্ম উস্তাদ জাকির হুসেনের। তাঁর পিতা ছিলেন তবলা বাদক উস্তাদ আল্লা রাখা। তাই ছোটো থেকে শুরু হয় তালিম। মাত্র সাত বছর বয়সে তবলা বাজিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে দেন জাকির। শুধু ভারতীয় সংগীতেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। আন্তর্জাতিক আঙিনায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ১৯৭৩ সালে জর্জ হ্যারিসন এবং জন হান্ডির অ্যালবামে কাজ করার সুযোগ পান। ১৯৮৮ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মান পান। ২০০২ সালে পান পদ্মভূষণ সম্মান। আর ২০২৩ সালে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কিংবদন্তি এই শিল্পীকে পদ্মবিভূষণ সম্মান প্রদান করা হয়। শেষবার ২০২২সালে কলকাতায় এসে অনুষ্ঠান করেন তিনি। সংগীতের মাধ্যমে বহু সম্মান এনে দিয়েছেন ভারতকে তিনি। ৬৬ তম গ্র্যামি পুরস্কারের মঞ্চে তিন-তিনটি পুরস্কার পেয়েছিলেন তবলা-শিল্পী। বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক পারফরম্যান্স, বেস্ট কনটেম্পোরারি ইনস্ট্রুমেন্টাল অ্যালবাম এবং বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক বিভাগে পুরস্কারে সম্মানিত হন তিনি ।