হেরে গিয়েও জিতে গিয়েছে লিসা ! জেনে নিন তার জয়ের কাহিনী

টিভি নাইনটিন এক্সক্লুসিভ - হার ও জিত জীবনের একটি অঙ্গ।তবে অনেকে জয় হওয়াকেই জীবনের সারমর্ম বানিয়ে নেয়। হেরে গিয়েও যে জয় লাভ সম্ভব হয় সেটি তাদের উপলব্ধির বাইরে থাকে।তবে এরকম অনেকে মানুষ থাকে যারা জয়ের আগে মানবিকতাকে বেছে নেয় এবং প্রকৃতপক্ষে তারাই হয়ে ওঠে আসল বিজয়ী।যেমন লিসা কুমারী নিজে হেরে গিয়েও জীবনের কাছে জিতে গিয়েছে।জেনে নেওয়া যাক তারই জয় ও পরাজয়ের কাহিনী।

নয়া দিল্লির বাসিন্দা লিসা কুমারী ছোট থেকেই খুবই দুরন্ত স্বভাবের হওয়ায় তার মা,বাবা তাকে খেলাধূলায় ব্যস্ত রাখতেন।লিসা পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতো।সকল প্রতিযোগিতায় লিসা প্রথম অথবা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করতো।একবার তাদেরই কলোনিতে এক দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।এই প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তিটিকে পুরস্কারের ট্রফির সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়।সেখানে বয়সের কোনও বিধিনিষেধ ছিল না।তাই অনেকেই সেই দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। লিসাও সেই প্রতিযোগিতায় নিজের নাম দেয়।প্রতিযোগিতার দিন লিসার সঙ্গে তার মা,বাবাও তাদের দৌড় দেখার জন্য যায়।যখন সকল প্রতিযোগী লাইনে দাঁড়িয়ে দৌড় শুরু করবে তখনই লিসা একজন মধ্যবয়স্ক লোককে দেখতে পায়। লোকটি বিড়বিড় করে শুধু বলছিল তাকে জিততেই হবে নইলে সে তার মেয়ের রোগের জন্য ওষুধ জোগাড় করতে পারবে না। লিসা এই কথাগুলো আসতে করে হলেও শুনতে পাচ্ছিল। প্রতিযোগিতা শুরু হলে দৌড় প্রতিযোগিতার শেষের দিকে যখন লিসা ফিনিশ লাইনের একদম শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছায় তখন সে নিজের থেকে নিজের গতি কমিয়ে দেয় এবং যে লোকটি নিজের মেয়ের ওষুধের জন্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল তাকে এগিয়ে যেতে দেয় ও তাকে জয়ী হওয়ার সুযোগ করে দেয়।অনেকেই এটা লক্ষ্য না করলেও তার মা,বাবা বিষয়টিকে দেখেছিল।বাড়িতে ফিরে তার বাবা যখন তার মেয়েকে সবকিছু জিজ্ঞেস করে তখন ইচ্ছে করে হেরে যাওয়ার কারণটি লিসা বলে দেয়। তার বাবা কথাটি শুনে তার মেয়েকে খুবই বাহবা দেয় এবং নিজের মেয়েটি যে মানুষের মতো মানুষ তৈরি হয়েছে এইভেবে সে মনে মনে খুবই আনন্দিত হয়।

'নারী শক্তি' কোনো বয়স অনুসারে প্রভাব ফেলে না।নারীদের মন বালিকাকাল থেকেই দয়া, মায়া, মমতায় পরিপূর্ণ হয়।তাদের মন ছোটবেলা থেকেই ফুলের মতো সুন্দর হয়। যেমন লিসার মধ্যে ছোট থেকেই জয়ী হওয়ার মানসিকতা তৈরি হলেও সে যখন দেখলো প্রতিযোগিতায় জয়লাভটি তার থেকে বেশি অন্য প্রতিযোগীটির প্রয়োজন তখন সে কোনো দ্বিধা ছাড়াই নিজের হার স্বীকার করে নিয়ে অপর প্রতিযোগীটিকে জেতার সুযোগ করে দেয়। এতেই বোঝা যায় তার মধ্যে কোনো হেরে যাওয়ার গ্লানি ছিল না ছিল শুধুমাত্র মানবিকতা,যা একটি মানুষের থাকা উচিত।