ধামেশ্বরে মহাপ্রভুর অন্নপ্রাশন, আয়োজন ৫৬ ভোগের
নিজস্ব প্রতিনিধি, নদীয়া - ধামেশ্বরে মহাপ্রভুর মন্দির যেন এক আনন্দময় উৎসবে পরিণত হয়েছে। ভক্তদের উলুধ্বনি ও কীর্তনের সঙ্গে পালিত হচ্ছে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠান। এই বিশেষ দিনে, মহাপ্রভু ভক্তদের কাছে তাদের প্রিয় নিমাই হয়ে উঠে।
শনিবার বিকেলে সমস্ত ধর্মীয় আচরণ ও রীতি নীতি মেনে শুরু হয় মহাপ্রভুর অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠান। সকাল থেকেই সেজে উঠেছে মন্দির প্রাঙ্গণ। এই দিনে দূর দূরান্ত থেকে বহু ভক্তদের ঢল নামে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য।দিনভর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের শেষে সন্ধ্যায় থাকে মহা অভিষেক পর্ব । মহাপ্রভুর জন্য নাট্যমন্দিরের প্রশস্ত চত্বরে ৫৬ ভোগ সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মিষ্টির সমাহার রাখা হয়। নামেই ছাপান্ন ভোগ হলেও পদের সংখ্যা প্রায় কয়েকশো ছাড়িয়ে যায়। এই ছাপান্ন ভোগের মধ্যে থাকে নানা ধরনের পদ যেমন - অন্ন, পরমান্ন, থেকে শুরু করে পুষ্পান্ন, মিষ্টান্ন ইত্যাদি। এই বছরের অন্নপ্রাশনে ধামেশ্বর মন্দিরের বিশেষ আকর্ষণ হল নদীয়াসহ বিভিন্ন জেলার ভিন্ন ভিন্ন মিষ্টির সমাহার। এই অন্নপ্রাশনের উৎসব একমাত্র পালন করতে পারেন মন্দিরের সেবাইত গোস্বামীরা, কারণ বংশানুক্রমে তারা এই উৎসব পালন করে আসছেন ও এনারাই বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর উত্তরাধিকার বহন করছেন।
দিনটির মাহাত্ম্য সম্পর্কে ধামেশ্বর মন্দিরের অন্যতম সেবায়ত ও বিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির সভাপতি সুদিন গোস্বামী জানিয়েছেন, ' মহাপ্রভুর জন্ম হওয়ার পরের দিনকে অন্নপ্রাশন হিসেবে পালন করা হয়। এই অন্নপ্রাশনের মাহাত্ম্য হচ্ছে এটাই যে মহাপ্রভু তার কৃষ্ণরূপে যে গোবরধন পর্বত তুলেছিলেন ৭ দিন ধরে সেই পর্বত ধরে রেখেছিলেন। ভগবানকে ৮বার সেবা করতে দিতে হয়, কিন্তু এই ৭ দিনে সে তার ৮বারের সেবা পায়নি। তাই এই ৫৬ ভোগকে সাক্ষী রেখে মহাপ্রভুর অন্নপ্রাশন হয়।'
তিনি আরও বলেন, ' এই ৫৬ ভোগের মধ্যে আছে শাকের ১০-১২ রকমের পদ, চাটনি ১০-১২ ও মিষ্টি প্রায় ১০৮ রকমের, এছাড়াও অন্ন, ডাল, ভাজা এইসব তো আছেই। আমাদের বংশের যে মহিলা ও মেয়েরা আছেন তরাই এই ভোগের রান্না করেন।'