১০০ দেশের ৫০০০ ভক্ত নিয়ে নবদ্বীপ ইসকনের মন্ডল পরিক্রমা
নিজস্ব প্রতিনিধি, নদীয়া - শুরু হল মায়াপুর ইসকনের নবদ্বীপ মন্ডল পরিক্রমা। ১০০ দেশের প্রায় ৫০০০ ভক্ত নিয়ে শুরু হল এই উৎসব। দেশ বিদেশের বহু ভক্ত এই পরিক্রমাতে অংশ নেওয়ার জন্য ভিড় করেছেন মায়াপুর ইসকনে।
শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর ৫৩৯ তম আবির্ভাব তিথিতে প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও শুরু হল নবদ্বীপের মন্ডল পরিক্রমা।মায়াপুর ইসকন থেকে এই পরিক্রমা শুরু হয়ে জল ও স্থল মিলিয়ে নবদ্বীপের নয়টি দ্বীপে ভক্তরা কীর্তন সহযোগে পরিক্রমা করবে। ফের আবার ইসকনে এসে এই পরিক্রমা শেষ হবে। আজ থেকে আগামী ১৬ই মার্চ পর্যন্ত চলবে এই পরিক্রমা। মহাপ্রভুর জন্ম তিথি উপলক্ষ্যে এই বিশেষ মন্ডল পরিক্রমা। ১০০ দেশের প্রায় ৫০০০ ভক্ত ইতিমধ্যে এই পরিক্রমায় অংশগ্রহণ করেছে। এই পরিক্রমার মূল উদ্দেশ্য হল স্বামী প্রভুপাদ ও শ্রী চৈতন্য যে কৃষ্ণনাম প্রচার করেছেন সেই প্রচারকে অব্যাহত রাখা। তার পাশাপাশি চৈতন্য মহাপ্রভুর যে বানী অর্থাৎ ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে যাতে কৃষ্ণ নামে মিলিত হতে পারে সেই উদ্দেশ্যেই এই পরিক্রমা। দেশ বিদেশের বহু ভক্ত এই পরিক্রমাতে অংশগ্রহণ করার জন্য ইতিমধ্যে মায়াপুরে আসতে শুরু করেছে। প্রায় ১ মাস ধরে চলবে এই উৎসব।
এই বিষয়ে ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস জানান, - ' চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম তিথি উপলক্ষে ৩৫ দিন ব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। ১০ই ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ই মার্চ পর্যন্ত চলবে। ১০০ দেশের ৫০০০ ভক্ত সহ প্রায় লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়েছে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এর মধ্যে বিশেষ বৈষ্ণব সম্মেলন ও ৭২ কিমি মন্ডল পরিক্রমা রয়েছে। ১৪ই মার্চ চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মদিনে খোলা মঞ্চে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।'
তিনি আরো বলেন,- ' এই উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা আসেনি তাদের আসার জন্য স্বাগত। আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সূচনা হল। সর্বোপরি, বিশ্বব্যাপী শান্তি, একতা ও হরে কৃষ্ণ নাম ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। '
বিদেশি ভক্ত বলরাম দাস জানান,- ' মায়াপুরের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রভুপাদ বিশ্বের সমস্ত মানুষকে একত্রিত করতে চেয়েছেন। আমি নিজেও একটি মুসলিম পরিবারের আগে তুর্কিতে থাকতাম। আমরা এখানে এক হয়েছি একজন ভগবানের কাছে এখানে দুটো আলাদা আলাদা ভগবান নেই। এটা আসলে একটা উদাহরণ যে আমরা কিভাবে একত্রিত হতে পারি। যুদ্ধের কোনো দরকার নেই যুদ্ধ আসে সাধারণত ভুল বোঝাবুঝি থেকে। ভগবান একটাই তা সে আল্লাহ হোক বা কৃষ্ণ আমরা যখন তাদের নাম জপ করি তখন আমাদের মন পবিত্র হয়ে যায়। সবটাই আমাদের আত্মা, শরীর বলতে কিছু নেই আলাদা দেখতে শরীরের আলাদা রং এইসব কিছুই চলে যায়।'
তিনি আরো বলেন,- ' আমরা একত্রিত হয়ে সব সমস্যার সমাধান করতে পারি। বিশেষ করে ধর্মের জন্য যে যুদ্ধ হয় সেসবও বন্ধ হয়ে যায় যদি এটা উপলব্ধি করা যায় যে আত্মার সম্পর্ক শুধু ভগবানের সাথে তা সে যে ভগবানই হোক না কেন ভগবান একজনই। আর এটাই এই শ্রীধাম মায়াপুরে দেখা যায়।'