News details

image

Rabi Mondal / 27 November, 2024

চিন্ময় প্রভুর অনুগামীদের সঙ্গে সংঘর্ষ পুলিশের, মৃত ১ আইনজীবী, আহত ৮

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা – ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারির পর থেকেই উত্তাল বাংলাদেশ। চিন্ময় প্রভুর অনুগামীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মৃত্যু হয় সইফুল ইসলাম আলম নামে এক আইনজীবীর। আহত হয়েছেন ৮ জন।

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নজিমউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, আইনজীবী সইফুল ইসলাম আলমকে চেম্বারের নিচে ধরে কুপিয়ে খুন করে বিক্ষোভকারীরা। তাঁকে সইফপলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আহত ৮ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় মঙ্গলবার ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে পুলিশি হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাঁকে প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে উত্তাল হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম। প্রিজন ভ্যান থেকে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ চাওয়ার বার্তা দিলেন ইসকনের সন্ন্যাসী।  

চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “আমাদের ৮ দফা দাবিকে সমর্থন করার জন্য ইসলামিক দলগুলির পাশাপাশি সকলের কাছে আমরা আবেদন করছি। আমরা সব গোষ্ঠীর জন্যই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চাই। এই দেশকে আমরা ভালোবাসি। আমরা ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ চাই।“ আদালত চত্বরে শ্রীরাম স্লোগান তুলে ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশি হিন্দুরা।  

সোমবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয় ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জেলা আদলাতে তাঁর জামিনের জন্য সওয়াল করেন ৫১ জন আইনজীবী। কিন্তু জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। এই ঘটনায় কড়া বার্তা দেয় ভারত সরকার। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসকনও। 

অবিলম্বে ইসকনের সন্ন্যাসীকে মুক্তির দাবি জানায় ভারতের বিদেশমন্ত্রক। ইউনুস সরকারের আমলে বাংলাদেশের মাটিতে সংখ্যালুঘদের ওপর অত্যাচার নিয়ে সরব হয় মোদি সরকার। এক বার্তা দিয়ে বিদেশমন্ত্রক জানায়, ক্রমাগত মৌলবাদীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর ক্রমশ বাড়ছে অত্যাচার। সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা করতে ব্যর্থ ইসনুস সরকার।  
 
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে একজোট হয়েছে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্য়ালঘু। এই জোটের মুখপাত্র ছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। তাঁর বিরুদ্ধে সেই সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান।

সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম সর্বত্র সন্ন্যাসীর গ্রেফতারির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখায় বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে ঢাকা পুলিশ।