"পুলিশ সহযোগিতা করে না বিএসএফকে" বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা - অনুপ্রবেশ নিয়ে শনিবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে বিএসএফকে দায়ী করেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। তার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিএসএফকে অসহযোগিতার অভিযোগ আনলেন শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর গোটা প্রশাসন বিএসএফের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। সোমবার সাংবাদি সম্মেলনের শুরুতেই শুভেন্দু বলেন, "কাশ্মীর থেকে পুলিশ এসে ক্যানিংয়ে জঙ্গি ধরছে। এরাজ্যে জমি অধিগ্রহণ আইন রয়েছে রাজ্যের হাতে। বিএসএফ কোনও জমি সরাসরি অধগ্রহণ করতে পারে না। জমি জটিলতার ক্ষেত্রে ডিএমরা রাজ্যের কথাতেই চলছে। রাজ্যের শতছিদ্র সীমান্ত দিয়ে লাগাতার অনুপ্রবেশ ঘটছে। জঙ্গি ঢুকছে। আর এই কাজে এজেন্সির ভূমিকা পালন করছে খোদ রাজ্য সরকার।"
সূত্রের খবর, সল্টলেকে বিজেপির কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, "জমি অধিগ্রহণ আইন সম্পূর্ণরূপে রাজ্যের হাতে। ১৮৯৪ সালে ব্রিটিশের আইন। জমি অধিগ্রহণ করেন কালেক্টরেট। সেই আইন ভারতের স্বাধীনতার পরেও চলছে। পরিবর্তন করা হয়নি। মাঝখানে যে কৃষি বিল এসেছিল তিনটি, তাতে এই আইনের বদল ছিল। কিন্তু, যে কারণেই হোক ভারত সরকার এই বিল তিনটিকে বাতিল করে। তাই ভারত সরকার সরাসরি সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া বা এইমস তৈরি করার জমি, বিমানবন্দর-জাতীয় সড়কের বা রেললাইনের জমি সরাসরি অধিগ্রহণ করতে পারে না। জেলাশাসকের মাধ্যমে করতে হয়। এখানকার ডিএমরা যাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাক্স বদল করেন, যাঁরা লোকসভা নির্বাচনে তাঁবেদারি করেন, সেই ডিএমরা মুখ্যমন্ত্রীর ইশারা বা নির্দেশের বাইরে এক ছটাক জমিও অধিগ্রহণ করে দিতে পারবেন না, মুখ্যমন্ত্রী যদি না চান।"
মুখ্যমন্ত্রীর ওপর আঙুল তুলে শুভেন্দু বলেন, "এই মুখ্যমন্ত্রী যিনি ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর বিধানসভায় বিএসএফের বিরুদ্ধে রেজ্যুলিউশন আনেন, সেই মুখ্যমন্ত্রী বিএসএফকে কাঁটাতার দেওয়ার জন্য জমি দিতে পারেন না। এটা একেবারে অন রেকর্ড সত্যি। তাই পশ্চিমবঙ্গে শতচ্ছিদ্র সীমান্ত। আজ সেই সীমান্ত দিয়ে প্রত্যেকদিন এরা ঢুকেছে।ভবিষ্যতেও ঢুকবে।"
এছাড়া শুভেন্দু বলেন, "গোটা ভারতে জঙ্গি, জেহাদি, মৌলবাদী, রোহিঙ্গা মুসলমান সাপ্লাই করার জন্য করিডর হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। সাপ্লাই করার এজেন্সি নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার, তার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর লোকেরা রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দিচ্ছেন, আধার কার্ড বানিয়ে দিচ্ছেন। বাংলাদেশের জঙ্গি দু'বার তৃণমূলকে দুবার ভোটও দিয়ে গিয়েছেন। তার ভোটার কার্ডও তৈরি হয়ে গেছে। রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং বিএসএফের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে।"
শুভেন্দু আরও বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমানার ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে ৮৩টি গরুর হাট। অথচ তা আইনে নিষিদ্ধ। চোরাচালানের উৎস এই গরুর হাটগুলি। ভারতে কোথাও এরকম পাবেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদ ডিজিপি। অথচ এখানে অ্যাডিশনাল চার্জে ডিজিপি রাখা হয়েছে। আর মালিককে সন্তুষ্ট করতে ডিজিপি বিএসএফের বিরুদ্ধে এসব কথা বলছেন। অ্যাডিশনাল চার্জে থাকা ডিজিপি বড় বড় কথা বলেছেন। রাইট উইংদের কথা বলছেন। কে রাইট উইং, আমি জানতে চাই।"
শুভেন্দুর আরও দাবি, "৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে মমতার সন্দেশখালির সভায়। রাজকোষের টাকা থেকে তা খরচ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রীর তো গাড়িতে করে সন্দেশখালিতে যাওয়া উচিত ছিল। অধিকাংশই তো আপনার ভোটব্যাঙ্কের এলাকা। কালো পতাকা কেউ দেখাতো না। পুষ্পবৃষ্টিই হত। আর ওই সুজয় মণ্ডল বিজেপির লোক নয়। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে মেসেজ করেছিলেন। ওঁর গোপনীয়তা রক্ষায় তা সামনে আনছি না। আমাকে জানিয়েছেন কেন যোগদান করেছে। লোকসভার ভোট থেকেই তৃণমূল করেছেন। সুজয় মণ্ডল তৃণমূলের পার্শ্বশিক্ষকদের সংগঠনের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পদাধিকারী।"