মীরাট হত্যাকাণ্ডে মুসকানকে চুম্বন পুলিশ আধিকারিকের! দায়ের এফআইআর
নিজস্ব প্রতিনিধি, মীরাট - মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যাতে দেখা গিয়েছে, অভিযুক্ত মুসকানকে চুম্বন পুলিশ আধিকারিকের। তা দেখে নড়েচড়ে বসেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। অভিযুক্ত ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ‘priyanshurox_31’ নামের এক ইনস্টাগ্রাম আইডির বিরুদ্ধে মীরাটের হ্মপুরী থানার একজন সিনিয়র সাব-ইন্সপেক্টর তথ্যপ্রযুক্তি আইনে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের উর্দি পরেই সিনিয়র আধিকারিক চুম্বন করছেন মুসকানকে। সূত্রের খবর, ডিপ ফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিওটি বানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, মীরাটের এসপি আয়ূশ বিক্রম সিংহ জানিয়েছেন, সাহিল শুক্লার ঘর ডেভিলের গ্রাফিতি, তান্ত্রিক প্রতীক এবং শয়তানের আঁকা ছবি দিয়ে ভরা ছিল। এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে কালো জাদুর প্রতি তাঁর গভীর আচ্ছন্নতা ছিল। অত্যন্ত কুসংস্কারাচ্ছন্ন থাকায় মুসকান কারসাজি করে কাজে লাগিয়েছিলেন সাহিলকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে প্রেমিক সাহিল রাজি ছিলেন না সৌরভকে খুন করতে। তাই প্রেমিককে রাজি করাতে স্ন্যাপচ্যাটে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলেন মুসকান। সেখানে সাহিলের মৃত মায়ের দোহাই দেওয়া শুরু করেন তিনি। বছরখানেক আগেই তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সৌরভকে খুনের জন্য রাজি করাতে থাকেন মুসকান।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সাহিলকে মুসকান বলেছিলেন, “তোমার মায়ের আত্মা চাইছেন সৌরভের মৃত্যু হওয়া উচিত। সে বারবার সেই সঙ্কেতই দিতে চাইছেন তোমাকে।“ সৌরভ মার্চেন্ট নেভি অফিসার নন, লন্ডনে একটি বেকারিতে কাজ করেন, এ কথাও সাহিলকে বলেছিলেন মুসকান। ধীরে ধীরে সৌরভকে খুন করার জন্য রাজি হয়ে যান সাহিল।
বাজার থেকে মাংস কাটার ছুরি নিয়ে আসেন মুসকান ও সাহিল। ২২০ লিটারের একটি জলের ড্রাম, ৫০ কেজি সিমেন্ট কিনে নিয়ে আসেন তাঁরা। সৌরভ আসার কয়েকদিন আগে উদ্বেগ ও অনিদ্রায় ভোগার অছিলায় ডাক্তারের কাছে যান ও প্রেসক্রিপশনে ঘুমের ওষুধ লিখিয়ে নেন মুসকান। ৪ মার্চ একমাত্র মেয়ের ৬ বছরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে লন্ডন থেকে বাড়িতে এসেছিলেন সৌরভ।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সৌরভের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন মুসকান। খাবার খেয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েন সৌরভ। অচৈতন্য হতেই তাঁর বুকে একের পর এক ছুরির কোপ বসান মুসকান। কিছুক্ষণ পর সেখানে পৌঁছন সাহিল। মাংস কাটার ছুরি দিয়ে সৌরভের মাথা ধড় থেকে আলাদা করে দেন মুসকানের প্রেমিক। সেদিন রাতেই সৌরভের দেহ টুকরো করেন তাঁরা।
এরপর নীল ড্রামের মধ্যে সিমেন্ট ঢালেন মুসকান ও সাহিল। যাতে দেহাংশের কোনও চিহ্ন কেউ খুঁজে না পান। সেই ড্রামটিকে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল দু’জনের। সন্দেহ যাতে না হয়, তাই আগে হিমাচল প্রদেশে ঘুরতে চলে যান তাঁরা। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরতেই ধরা পড়ে যান তাঁরা।