নিঃশর্ত জামিন পিকের, অনশন চালিয়ে রাখার হুঁশিয়ারি প্রশান্ত কিশোরের
নিজস্ব প্রতিনিধি, পাটনা – দীর্ঘ টানাপড়েনের পর সোমবার রাতে নিঃশর্ত জামিন পেলেন জন সুরজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত কিশোর। জেল মুক্তি পেলেও অনশন চালিয়ে রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার পিকেকে পাটনা আদালতে তোলা হয়। ২৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ড ও শর্তে তাঁর জামিন মঞ্জুর করে আদালত। শর্ত দেওয়া হয়, এমন অপরাধ ভবিষ্যতে তিনি আর করবেন না। তখন পিকে দাবি জানান, ধর্নায় বসা ও আন্দোলন করা তাঁর অধিকার। তিনি কোনও অন্যায় করেননি। ভবিষ্যতে তিনি যদি কোনও আন্দোলন করেন তবে এই শর্তের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করবে।
আদালতের কাছে শর্তনামা থেকে নির্দিষ্ট ওই শর্ত বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়। তখন বিচারক জানায়, নির্দেশ জারি হয়ে গিয়েছে। জামিন পেতে গেলে এই শর্ত তাঁকে মানতে হবে। তাঁকে ফের নিয়ে যাওয়া হয় বেউর জেলে। অবশেষে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে টালমাটালের পর পিকেকে নিঃশর্ত জামিন দেয় আদালত।
উল্লেখ্য, সোমবার ভোর ৪টে নাগাদ পাটনায় গান্ধী ময়দানে প্রশান্ত কিশোরের অনশনস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ বাহিনী। সেখান থেকে পিকেকে জোর করে তুলে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের। এমনকি পিকেকে পুলিশ চড় মারে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে গ্রেফতার করেই এইমস হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে।
সূত্রের খবর, এদিন ভোর ৪টে নাগাদ পাটনায় গান্ধী ময়দানে প্রশান্ত কিশোরের অনশনস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ বাহিনী। সেখান থেকে পিকেকে জোর করে তুলে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের। এমনকি পিকেকে পুলিশ চড় মারে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৩ ডিসেম্বর বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রিলিমিনার পরীক্ষা হয়। অভিযোগ পরীক্ষা হওয়ার আগেই প্রশ্নফাঁস হয়ে গিয়েছে। সেই পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেন চাকরিপ্রার্থীরা। এমনকি এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে চাকরিপ্রার্থীরা জানালেও কোনও লাভ হয়নি। এই আবহে চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়ান বিহারের জন সুরাজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত কিশোর।
পাটনার গান্ধী ময়দানে জমায়েতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু তাঁর আবেদনে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এরপর এদিন রাতে পিকের নেতৃত্বে পাটনার গান্ধী ময়দান থেকে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাড়ির উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করেন চাকরিপ্রার্থীরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে থাকে চাকরিপ্রার্থীরা। তখন তাঁদের উপর জলকামান ছোড়া ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
পাটনা সেন্ট্রালের পুলিশ সুপার জানান, “চাকরিপ্রার্থীদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল যাতে আমাদের কাছে তাঁদের দাবি রাখেন। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা অনড় থাকায় তাঁদের আটকাতে জলকামান ছোড়া হয়।“ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশান্ত কিশোর সহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধেও মামলা করেছে পুলিশ।
প্রশান্ত কিশোরের অভিযোগ, “দীর্ঘ দিন ধরে বিহারে চাকরির পরীক্ষাতে কারচুপি চলছে। বছরের পর বছর ধরে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলেখেলা চলছে। এবার এর শেষ দেখা দরকার। একজোট হয়ে পড়ুয়াদের এবার লড়তে হবে। সরকার এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নীতীশ কুমার বার বার দিল্লি যেতে পারেন। কিন্তু একবার ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করার সময় নেই ওনার।“