রণক্ষেত্র রায়গঞ্জ! ডাম্পারে ধাক্কায় মৃত ১

নিজস্ব প্রতিনিধি, উত্তর দিনাজপুর - ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা ঘিরে রণক্ষেত্র রায়গঞ্জের শিল্পীনগরের পুরনো জাতীয় সড়ক এলাকা। শুক্রবার মেয়েকে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছনোর জন্য বাইকে যাচ্ছিলেন বাবা। আচমকাই উলটোদিক থেকে আসা একটি ডাম্পারের ধাক্কায় বাইক থেকে পড়ে মৃত্যু হল বাবার। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি মেয়ে। এই দুর্ঘটনার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। কার্যত ডাম্পারটিতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেন তাঁরা।

      সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুরে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা ঘটল রায়গঞ্জে। এদিন চণ্ডীতলার বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির সুভাষ দে সরকার মেয়ে সুস্মিতাকে নিয়ে তাঁর কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। সুস্মিতা দে সরকার স্থানীয় এক নার্সিংহোমের নার্স। তাঁকে প্রতিদিনই হাসপাতালে নিয়ে যান সুভাষ বাবু। এদিন নম্বরপ্লেট বিহীন একটি ডাম্পার মালদার দিকে রওনা দিয়েছিল। শিল্পীনগর এলাকায় যখন ডাম্পারটি পৌঁছয়, তখন তার সামনে দিয়ে ধীর গটিতে একটি বাইকে করে যাচ্ছিলেন বাবা ও মেয়ে। ডাম্পারের গতি এত বেশি ছিল যে, নিমেষের মধ্যে বাইকটিকে ধাক্কা মারে। যার জেরে সুস্মিতা রাস্তার একদিকে ছিটকে পড়ে এবং তার বাবা ছিটকে পড়ে অন্যদিকে। তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় সুভাষ বাবুকে।

      এই ঘটনার ঘিরে শোরগোল শুরু হয় এলাকায়। মৃতের ছেলে শুভজিৎ রায়গঞ্জ আদালতের আইনজীবী। তাঁর অভিযোগ, ''শিল্পীনগরের এই রাস্তা সবসময়ে খুব ব্যস্ত থাকে। কিন্তু এখানে কোনও স্পিড ব্রেকার নেই, কোনও পুলিশ কিয়স্কও নেই। তা থাকলে এই বাইক দুর্ঘটনায় আমার বাবার মৃত্যু হতো না।''

    এই ঘটনার জেরে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ডাম্পারটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। দাউদাউ করে আগুন পুড়তে থাকে ডাম্পারটি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রায়গঞ্জ থানার পুলিশ এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ডাকা হয় দমকল বাহিনীকে। অনেক চেষ্টার পর ডাম্পারের আগুন আয়ত্তে আসে। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছান রায়গঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতিশ্রুতি দেন, দু-একদিনের মধ্যেই এখানে স্পিড ব্রেকার বসানো হবে। পুলিশ কিয়স্কও করে দেওয়া হবে। যাতে ট্রাফিক ঠিকমতো সামলানো সম্ভব হয়। তাঁর সেই আশ্বাসে অবশেষে বিক্ষোভ উঠে যায়।