ঐতিহ্যের হালখাতা, ২০২৬ সালের পর বন্ধ হতে পারে বিক্রি

নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি - বাঙালির নববর্ষের ঐতিহ্য হালখাতা এবার সমাপ্তির পথে। আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে বাঙালির ঐতিহ্য আজ বিলুপ্তির পথে। ২০২৬ সালের পর থেকে হালখাতা বিক্রি বন্ধ করে দেবে এমনই ইঙ্গিত দিলেন মার্চেন্ট রোডের হালখাতা বিক্রেতা মোহাম্মদ আবীর হোসেন। 

সূত্রের খবর, হালখাতা - বাঙালির ব্যবসায়ীদের কাছে নববর্ষের এক ঐতিহ্যবাহী অনুষঙ্গ। বাংলার বছরের প্রথম দিনে নতুন খাতা খুলে ব্যবসায়িক লেনদেনের শুভ সূচনা করার রেওয়াজ বহুকাল ধরেই চলে আসছে। এই ঐতিহ্যকে জীবিত রাখতেই বিহারের মোহাম্মদ আবীর হোসেন গত চার দশক ধরে জলপাইগুড়িতে হালখাতা বিক্রি করে আসছিলেন। প্রতিবারের মতো এবারও তিনি মার্চেন্ট রোডে রঙ-বেরঙের হালখাতার সম্ভার নিয়ে বসেছেন। কিন্তু আক্ষেপের সুরে জানালেন, আগের মতো বিক্রি আর নেই। আগামী মঙ্গলবার ১ লা বৈশাখ। তবুও তাঁর দোকানে দেখা মেলেনি আগের সেই ভিড়। বিক্রি না থাকায় তিনি ঠিক করেছেন, আগামী ২০২৬ সালে শেষবার আসবেন জলপাইগুড়িতে। তারপর এই পেশা ছেড়ে দেবেন। 

হালখাতা বিক্রেতা মোহাম্মদ আবীর হোসেন বলেন, " আমার বাবা এখানে এসে এই ব্যবসা করতো, আমিও আসি প্রায় ৪০ বছর ধরে। বিহারের দ্বারভাঙ্গা থেকে আসি প্রতি বছর। আগে অনেক বেশি চল ছিল , কিন্তু এখন সময়ের সঙ্গে কম্পিউটার এসে যাওয়ায় বিক্রি অনেক কমে গেছে। আগামীকাল পয়লা বৈশাখ কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেরম কোনো বিক্রি নেই। আগে ৪-৫ জন কর্মীকে নিয়ে আসতাম এখন একাই আসি। যেহেতু অনেক বছর ধরে আসছি তাই না আসলে ভালো লাগে না। কিন্তু ২০২৬ সালের পর থেকে আর আসবো না। এই ব্যবসা ছেড়ে দেব।"

তার দোকানে আগত তাপসী দাস নামে এক ক্রেতা জানান, ' কম্পিউটারের যুগ হলেও যাদের দরকারে লাগবে তারা অবশ্যই কিনবে। কারণ এই খাতাতে পূজো করেই আমাদের ব্যবসা শুরু হয়। সারা বছরের লেনদেন এখানেই লিখতে হয়।'