দলবিরোধী কাজে কড়া পদক্ষেপ তৃণমূলের, সাসপেন্ড শান্তনু-আরাবুল
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা - দলবিরোধী কাজ করলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল দলীয় বৈঠকে। এবার সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হল হাতেকলমে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড শান্তনু সেন ও আরাবুল ইসলাম। শুক্রবার একটি দলীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এঁদের বিরুদ্ধে উঠেছে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগও যা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। শুক্রবার এমনই জানালেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
সূত্রের খবর, দলবিরোধী কাজের অভিযোগে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম ও তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ তথা চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেনকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। শুক্রবার বিকেলে তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার কমিটির বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।তবে কতদিনের জন্যে তারা সাসপেন্ড, সেই বিষয়ে এখনো কিছুই জানানো হয়নি দলের তরফে। এদিন দলের তরফে জয়প্রকাশ মজুমদার একটি ভিডিয়ো বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন । সংক্ষিপ্ত বার্তায় জয়প্রকাশ বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়ে আরাবুল ইসলাম এবং শান্তনু সেনকে দল থেকে নিলম্বিত করেছেন অর্থাৎ সাসপেন্ড করা হচ্ছে।"
প্রসঙ্গত, আরজি কর আন্দোলনের সময় থেকেই শান্তনু সেনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল দলের। আরজি কর ইস্যুতে শান্তনু সেনের মন্তব্য ভালভাবে নেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সময় সন্দীপ ঘোষ সম্পর্কেও সরব হয়েছিলেন শান্তনু সেন। আরজি হাসপাতালে তাঁর মেয়ের সঙ্গেও খরাপ ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলে ছিলেন। এর পরই তাঁকে তৃণমূলের মুখপাত্র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সাসপেন্ডের পর সেই নিয়ে ফের উঠছে প্রশ্ন।
দলের সিদ্ধান্ত জানার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শান্তনু । তিনি বলেন, "আগে অনৈতিকভাবে আমাকে মেডিকেল কাউন্সিল থেকে বের করা হয়েছিল । তখনও দেখলাম মিডিয়া আগে জানতে পারে। পরে আমার কাছে খবর আসে। এবারও তাই হয়েছে। আমি কলেজ থেকে রাজনীতি করি। প্রথম দিন থেকে কংগ্রেসের পতাকা শক্ত করে ধরেছিলাম। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধায়ের সঙ্গে আছি তৃণমূল তৈরির প্রথম দিন থেকে। কিন্তু এখন আমি শুনছি, অনেকে বলছে আরজি করে আমি দল বিরোধী কাজ করেছি। আমায় কেউ প্রমাণ করে দিক আমি কী দলবিরোধী কাজ করেছি । তাহলে আমার ক্ষমা চাইতে কোনও সমস্যা নেই।"
অন্যদিকে আরাবুল ইসলামকে নিয়ে তৃণমূলের অস্বস্তি অনেকদিনেরই। এর আগেও ৬ বছরের জন্য তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হন ভাঙড়ের দাপুটে নেতা। এরপর তাঁকে ফের তৃণমূলে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু আইএসএফ কর্মীকে খুনের অভিযোগে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি আরাবুলকে গ্রেফতার করেছিল উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ। ৭ মাস পর জেল থেকে মুক্তি পান তিনি। তবে তারপর থেকেই আরেক তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লার সঙ্গে তাঁর বারংবার সংঘাত লাগে। নতুন বছরের প্রথমদিনই আরাবুলের ওপর হামলার অভিযোগও ওঠে শওকতের বিরুদ্ধে। খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন আরাবুল। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে বারেবারে অস্বস্তি বাড়ছিল দলের অন্দরে। ঠিক এই কারণেই আরাবুলকে সাসপেন্ড করা হল কিনা সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।