যোগীর স্টাইলে মমতার বাংলায় এনকাউন্টার , খতম পলাতক বন্দি সাজ্জাদ
নিজস্ব প্রতিনিধি, উত্তর দিনাজপুর - যোগী রাজ্যে হামেশাই দেখা গেছে এনকাউন্টারের দৃশ্য। তবে এবার সেই দৃশ্যের দেখা মিলল মমতার বাংলায়। গত বুধবার আদালত থেকে জেলে ফেরার সময় রাস্তায় শৌচালয় যাওয়ার নাম করে গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ার কাছে পুলিশকে গুলি চালিয়ে পালিয়েছিল বিচারাধিন বন্দি সাজ্জাদ আলম। অবশেষে শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ সীমান্তে এনকাউন্টারে মৃত্যু হল সেই অভিযুক্ত পলাতক বন্দির। মূলত কাঁটাতার পেরিয়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল সাজ্জাদ। তখনই পুলিশের গুলিতে আহত হয় সে। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় সাজ্জাদকে।
সূত্রের খবর, ডিজি রাজীব কুমার বলেছিলেন, দুষ্কৃতীরা যদি পুলিশকে লক্ষ্য করে একটি গুলি চালায়, তাহলে পুলিশ চারটি গুলি চালাবে। এরপর উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তিনি। তারপরই সরাসরি অ্যাকশনে নামে পুলিশ। জানা যায় যে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে হামলা চালিয়ে ২ পুলিশকর্মীকে জখম করা হয়েছিল সেই আগ্নেয়াস্ত্র ইসলামপুর কোর্ট লক আপেই অভিযুক্তের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে নিয়েই পুলিশের সঙ্গে গাড়িতে ওঠে সাজ্জাদ আলম। পরে রাস্তায় শৌচাগারে যাওয়ার জন্য গাড়ি দাঁড় করাতে পুলিশকে কার্যত বাধ্য করে সে। শেষ পর্যন্ত গুলি চালিয়ে সে পালিয়ে যায়। তদন্তে উঠে আসে অপর ব্যক্তি আব্দুল হুসেনের নামও। এই আব্দুল হুসেনই সাজ্জাদকে আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিল বলে খবর। এরপর এই দুজনের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। সাজ্জাদ ও আব্দুলকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয় পুলিশের তরফে। নজর রাখা হচ্ছিল সিসিটিভিতেও। সেখান থেকে সাজ্জাদের গতিবিধি জানতে পারেন তদন্তকারীরা।
সূত্র অনুযায়ী শুক্রবার রাতে সীমান্তের তিনটি গ্রাম ঘিরে নেয় পুলিশ। এরপর পুলিশকে দেখে গোয়ালপোখর থানার সাহাপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীপুরে সীমান্ত টপকে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত বন্দি। এমনকী পুলিশকে লক্ষ্য করে পাল্টা গুলিও চালায়। পুলিশের তরফেও চালানো হয় গুলি । সেই গুলিতে জখম হয় সাজ্জাদ। পরে ইসলামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সাজ্জাককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সূত্রের খবর, তিনটি গুলি লাগে সাজ্জাদের দেহে। জখম অবস্থায় তাকে লোধন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত সাজ্জাদ আলম কালিয়াচকে পোলট্রি ফার্মের মালিক খুনের অভিযোগে রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বিচারাধীন বন্দি ছিল। গত বুধবার ইসলামপুর আদালতে শুনানিতে হাজির করা হয় তাকে। এরপর শুনানি শেষে প্রিজন ভ্যানে করে রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তাকে। গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ার একরচালা কালীমন্দিরের কাছে শৌচকর্ম করবে বলে জানায়। প্রিজন ভ্যান থেকে নামে সে। অভিযোগ, প্রিজন ভ্যান থেকে নেমে দুই পুলিশকর্মীকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। এরপর একটি বাইকে চড়ে চম্পট দেয়।
এই ঘটনার পরে রায়গঞ্জ পুলিশ সুপার সাজ্জাকের ২ লক্ষ টাকা মাথার দাম ধার্য করে। এরপর হস্পতিবার জখম দুই পুলিশকর্মীকে দেখতে যান খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাজ্জাদকে গ্রেফতার করতে হবে বলেই নির্দেশ দেন। পুলিশের উপর গুলি চালালে পালটা তার ৪ গুণ গুলি চালানো হবে বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ডিজি। তার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের এনকাউন্টারে খতম সাজ্জাক। তবে তাকে পালাতে সাহায্যকারী আব্দুল এখনও ফেরার।