তৃণমূলের গুণ্ডা ও ধর্ষণকারী” নিয়ন্ত্রণ করছে বিশ্ববিদ্যালয়, বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর!!
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা - কলকাতার কসবা এলাকার একটি প্রাইভেট ল কলেজের চত্বরেই ঘটে গেল এক লজ্জাজনক ও নৃশংস ঘটনা। কলেজের এক স্নাতকোত্তর ছাত্রী অভিযোগ করেন, তাঁকে কলেজ চত্বরে ডেকে নিয়ে গিয়ে একাধিক ব্যক্তি মিলে ধর্ষণ করে। রাতের অন্ধকারে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় নাম উঠে এসেছে কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র, কর্মী ও নিরাপত্তাকর্মীর। ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।
নির্যাতিতার দাবি, অভিযুক্তরা কলেজের প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এবং দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসে ক্ষমতা দেখিয়ে চলছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন ছাত্রীকে কৌশলে ডেকে কলেজ ভবনের নির্জন অংশে নিয়ে যাওয়া হয়, তারপর চলে বর্বরতা।
এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন TMCP-র বিরুদ্ধে আঙুল তুলে বলেন, “কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন তৃণমূলের গুণ্ডা ও ধর্ষণকারীদের নিয়ন্ত্রণে। যাদের হাতে শিক্ষাঙ্গন, তাদের কাছেই ছাত্রীরা আজ সবচেয়ে অনিরাপদ।”
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিরোধীরা সোচ্চার হয়েছেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই ঘটনাকে প্রশাসনিক ব্যর্থতা বলেই চিহ্নিত করে বলেন, “এটা কেবল ধর্ষণের ঘটনা নয়, এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যর্থতা ও নৈতিক পতনের প্রমাণ।”
তবে তৃণমূলের তরফে পালটা দাবি করা হয়, অভিযুক্তরা দলের সঙ্গে যুক্ত নয় এবং দল এই ঘটনার নিন্দা করছে। দলের মুখপাত্র বলেন, “এই ধরনের অপরাধীদের কোনও রাজনৈতিক রং নেই। আইন আইনের পথেই চলবে। দ্রুততম সময়ে বিচার হবে।”
এই ঘটনার পর ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা, সিসিটিভি, জেন্ডার সেল ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এই ঘটনার রেশ রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ, প্রতিবাদ আর প্রতিবাদ। কলকাতা পুলিশের ভূমিকাকে দ্রুত হলেও যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন অনেকে। এবং প্রশ্ন তুলছেন,এই ঘটনায় যদি অভিযুক্তরা রাজনৈতিক আশ্রয়ে না থাকতেন, তাহলে কি এতদিনে কলেজ প্রশাসন আরও আগে ব্যবস্থা নিত?
শেষ পর্যন্ত, এই ঘটনায় দোষীদের কঠোরতম শাস্তি ও শিক্ষাঙ্গনের রাজনৈতিক দখলদারি থেকে মুক্তি,এটাই এখন সাধারণ মানুষের দাবি। এই ঘটনার নিষ্পত্তি কেবল আইনি বিচারে থেমে থাকলে চলবে না, তার পাশাপাশি গোটা শিক্ষাপ্রাঙ্গনে নিরাপত্তা ও নৈতিক সংস্কার আনাই এখন সময়ের দাবি।